নিজস্ব প্রতিবেদক ||
যশোরে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন ও স্ত্রী, সন্তানের অধিকার ফিরে পেতে যশোর আদালতে মামলা দায়ের করেছেন এক ভুক্তভোগী গৃহবধূ (২০)। গত ২৭ এপ্রিল যশোর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলী আদালতে এ মামলা দায়ের করেন ওই গৃহবধূ।
গৃহবধূ যশোর শহরতলীর বাহাদুরপুর এলাকার বাসিন্দা। এবং আসামিরা হলেন ভুক্তভোগী গৃহবধুর স্বামী যশোর শহরের জেল রোড লেবুতলা এলাকার মৃত আনছার আলীর ছেলে আরিফুল ইসলাম (৩০), গৃহবধূর শাশুড়ী আঞ্জুমান আরা (৫০) ও গৃহবধূর নোন্দাই বাদশা (৪০)।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই নারীর সাথে ২০২১ সালের ২৭ মার্চ ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক এক লাখ টাকা দেনমোহর কাবিনমূলে বাদী আরিফুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয়। বিবাহের পর আরিফুল এবং ওই গৃহবধূ আরিফুলের বাড়িতে ঘর সংসার করতে থাকে। বিবাহের সময় ওই গৃহবধূর বাবার বাড়ি হতে হাতে, কানে, গলায় ও স্বামী আরিফুলকে আংটিসহ স্বর্ণালংকার প্রদান করে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তার স্বামী আরিফুল ঘর-সংসার করাকালীন সময়ে গৃহবধূর শাশুড়ী ও নন্দাইয়ের প্ররোচনায় আরিফুল গৃহবধূর কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দাবি করে। যৌতুকের টাকা না পেয়ে ওই গৃহবধূর উপর প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।
এক পর্যায়ে যৌতুকের টাকা না পেয়ে আরিফুল ওই গৃহবধূকে মারপিট করে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গত ২২ সালের ৫ জুলাই বাবার বাড়িতে তাড়িয়ে দেয়। ওই গৃহবধূ বাবার বাড়িতে নির্যাতনের বিষয়টি অবগত করে। এরই মধ্যে চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল বাবার বাড়িতে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন ওই গৃহবধূ।
পারিবারিক কলহের আপোষ মিমাংসার উদ্দেশ্যে গৃহবধূর বাবার বাড়ি হতে সংবাদ দিয়ে গৃহবধুর শশুর বাড়ির লোকজনের সাথে চলতি বছরের ২১ এপ্রিল বাবার বাড়িতেই একটি সালিসি বৈঠক হয়। সালিসিতে যৌতুকের দাবি না করে গৃহবধূকে গ্রহন করার অনুরোধ করলে স্বামী আরিফুল তা অস্বীকার করেন। এ সময় তিনি যৌতুকের টাকা না পেলে ওই গৃহবধূকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বেশি যৌতুকের বিনিময়ে বিয়ে করার হুমকি দিয়ে সালিসি বৈঠক থেকে চলে যান।
এদিকে গৃহবধূর শাশুড়ী আঞ্জুমান আরা ও নন্দাই বাদশা আর্থিক সুবিধা পেতে স্বামী আরিফুলকে যৌতুক গ্রহনে নানাভাবে প্ররোচনা দিয়ে ওই গৃহবধূকে নির্যাতন করাতেন বলেও মামলায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। সবশেষে যৌতুকের দাবি প্রত্যাহার এবং ক্ষতিপূরন দুই লাখ টাকা এবং শিশু সন্তানের সুরক্ষা, বাসস্থান এবং স্ত্রীর মর্যাদা অধিকার দাবি করে মামলা দায়ের করতে বাধ্য হন ওই ভুক্তভোগী গৃহবধূ।
Leave a Reply