কে,এম,মোজাপ্ফার হুসাইন
ডি,ইউ,এম,এস ৩ য় বর্ষ
★কানে ব্যথা মাথা ঘোরা
★মস্তিষ্কের ক্ষতি
★মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ বৃদ্ধি
★কানে সংক্রমণ
গতকাল ১৬ বছরে পা দিল ঐশী। জন্মদিন উপলক্ষে পেয়েছে দামি মোবাইল। সারাদিন সুযোগ পেলেই ফোনে গান শোনে, গেম খেলে- এসব নিয়ে মেতে থাকে সে। ধীরে ধীরে পরিবর্তন এলো তার স্বভাবে, যা দেখা যায়। নিয়ে বেজায় অসন্তুষ্টি বাড়ির গুরুজনরা। ঐশীর মা লক্ষ্য করছে, ইদানিং ঐশী অবাধ্য হয়ে উঠেছে এবং সারাক্ষণ আনমনা থাকছে। তেমন গুরুত্ব না দিলেও, পরে মেয়ের ওপর একটু বেশি নজর দিতেই বুঝলেন, কারণটা ঠিক কী। হঠাৎ একদিন ঠান্ডা লাগা থেকে কানের ব্যথা হচ্ছে অনুমান করে ডাক্তারের কাছে পৌঁছে জানতে পারলেন যে, দীর্ঘদিন ধরেই ঐশী কানের রোগে আক্রান্ত, যা আগে ধরা পড়েনি। উলটে, ধীরে ধীরে কমছে ঐশীর শ্রবণক্ষমতা। সে আনমনা বা বেয়াড়া হয়ে যায়নি, বরং এক গভীর কানের সমস্যায় সে ভুগছে। দীর্ঘক্ষণ হেডফোন ব্যবহার করে। গান শোনা থেকেই এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে। শুধু ঐশীই নয় এই সমস্যায় ভুক্তভোগী অনেকেই।
★মস্তিষ্কের ক্ষতি
দ্রুতগতিতে ছুটে আসা একটি গাড়ি বা বাসের সামনে পড়লেন। অসতর্কতার সঙ্গে হেডফোনের ব্যবহারে রাস্তাঘাটে প্রাণ হারিয়েছে, এমন খবর প্রতিদিনই সংবাদপত্রে
রোজ হেডফোন ব্যবহার করলে কানের ময়লা পরিষ্কার হয় না। হেডফোনের প্লাগের জন্য ময়লা কানের আরো ভেতরে ঢুকে যায়। আর
এই ময়লা জমে কানের ক্ষতি হয়।
অতিরিক্ত হেডফোন ব্যবহার করে গান শোনার জন্য কানের পর্দায় ঘা হওয়াটা খুবই সাধারণ বিষয়। প্রায়শই এরকম কেস দেখা যায়।
যখন-তখন হেডফোনের ব্যবহার চূড়ান্ত অসামাজিকতারও উদারহরণ। সারাক্ষণ হেডফোন কানে দিয়ে গান শুনতে গিয়ে মানুষ ক্রমশ তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। ন্যূনতম যোগাযোগটুকু পর্যন্ত রাখছে না। অসামাজিক জীবে পরিণত হচ্ছে বর্তমান প্রজন্ম।
দীর্ঘদিন ধরে হেডফোন ব্যবহারের ফলে যেমন: কমতে পারে শ্রবণ ক্ষমতা, তেমনই হতে পারে। নার্ভ লস।
খুব জোরে আওয়াজ হলে কানের ক্ষতি হয়, এ কথা সবারই জানা। কিন্তু, দীর্ঘদিন হেডফোন ব্যবহারে যে সমপরিমাণ ক্ষতি হয়, তা হয়তো আলোকেরই অজানা। বোমা ফাটা বা মাইকের তীক্ষ্ণ শব্দে যেমন কেউ শ্রবণক্ষমতা হারাতে পারে, তেমনই প্রতিদিন ফুল ভলিউমে গান। শুনলেও শ্রবণক্ষমতা নষ্ট হতে পারে। এছাড়া হেডফোন ব্যবহারে রয়েছে একাধিক ঝুঁকি।
ক্রমাগত হেডফোনের ব্যবহারের ফলে সাধারণ মানুষের স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাচ্ছে, কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। তাছাড়া, ধীরে ধীরে ব্রেন ও ইনঅ্যাক্টিভ হতে শুরু করে সারাদিন কানে হেডফোন গুঁজে ফুল ভলিউম গান শোনার কারণে।
প্রভাব পড়ে থিঙ্কিং প্রসেস বা চিন্তা প্রক্রিয়ায়। পড়াশোনা থেকে কাজকর্ম, সবকিছুতেই চিন্তা প্রক্রিয়ার গুরুত্ব রয়েছে। তাই ব্যাঘাত ঘটে সেক্ষেত্রেও।
সমস্যার শেষ স্তর হল নার্ভ লস। দীর্ঘদিন হেডফোনে গান শোনার জন্য নার্ভ লসের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
হেডফোনে গান শোনা কানের পক্ষে ক্ষতিকারক। গান শোনার সময় ভলিউম অবশ্যই কম থাকা দরকার। এত সমস্যার মধ্যেও এই হেডফোনের একটা উপকারিতাও হয় মোবাইলের থাকা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন কানের ক্ষতি করে না। তাই ফোনে কথা বলার ক্ষেত্রে হেডফোন ব্যবহার করা ভালো। এতে, ক্ষতিকারক বিভিন্ন দিক সরাসরি কান স্পর্শ করতে পারে না।
চিকিৎসা
কানের সমস্যা নিয়ে রোগীরা এলে প্রথমে। রোগের কারণ নির্ণয় করা হয়। অধিকার সময়ই দেখা যায় রোগীরা হেডফোন ব্যবহারের কথা স্বীকার করতে চান না। চিকিৎসাক্ষেত্রের বাধা সৃষ্টি করে। সে এই হোক, রোগ নির্ণয়ের পর কাউন্সেলিং করা হয়। রোগীকে ওষুধ দেওয়া হয় এবং হেডফোন ব্যবহার বন্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। যদি সমস্যা গুরুতর হয় সেক্ষেত্রে কানের মেশিনও দেওয়া হয়।