আশিকুর রহমান, নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনার ঐতিহ্যবাহী মারাদিঘী গোলাম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মোঃ জাহেদ আলীর স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজিত হয়েছে।
বুধবার দুপুর দুইটায় মারাদিঘী গোলাম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে স্কুল প্রাঙ্গনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিদ্যালয়েটি সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী এবং ক্রীড়া শিক্ষক ওয়াহাব মিয়ার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, স্কুলের প্রাক্তন সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন খান, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক প্রাণেশ চন্দ্র সরকার, জাহেদ আলীর সহধর্মিণী হাজেরা খাতুন ও পুত্র অধ্যাপক হুমায়ুন কবিরসহ অন্যান্যরা। এসময় বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে জাহেদ আলীর প্রতি স্মৃতিচারণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আলোচনা শেষে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
শিক্ষানুরাগী জাহেদ আলী ১৯৬৫সালে তাঁর এলাকা ‘মারাদিঘী’ গ্রামের সাথে তাঁর পিতা গোলাম হোসেন এর নাম সংযুক্ত করে ‘মারাদিঘী গোলাম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়’ নামক স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। জানা যায় সূচনালগ্নে স্কুলটির শিক্ষার্থী সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকজন থাকলেও এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় বারোশত।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান (নীল ব্লেজার) প্রতিষ্ঠাতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, জাহেদ স্যার শুধু একজন ব্যক্তি ছিলেন না, তিনি একটা প্রতিষ্ঠান ছিলেন। তিনি এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করার ফলে প্রায় ৫৮বছর ধরে এখান থেকে পড়াশোনা করে অনেকে বেরোচ্ছে। বিশেষ করে এই বিদ্যালয় থেকে পড়ে যাওয়া ড. সানাউল্লাহ পৃথিবীর বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে অন্যতম হিসেবে স্থান করে নিয়েছেন।”
মারাদিঘী গোলাম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী (সাদা পাঞ্জাবির উপর কোট) বলেন, “তিনি একটি প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। সেই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করা সময়ে তিনি চিন্তা করেন- নিজ এলাকায় কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। পোলাপানের পড়ালেখা করার কোনো সুযোগ নেই। অনুন্নত এলাকা। সেইদিক বিবেচনা করে নিজে উদ্যোগ নিয়ে এই বিদ্যালয়টি গড়ে তোলেন।”
আইয়ুব আলী আরো বলেন, সকলের কাছে আমি এই নিবেদন করছি- “এই বিদ্যালয়টি শ্রদ্ধেয় জাহেদ আলী স্যার যেভাবে নির্মাণ করে মৃত্যুবরণ করেছেন, আমাদের পবিত্র দায়িত্ব হবে সেই বিদ্যালয়টির শিক্ষা যাতে পরিপূর্ণভাবে সমৃদ্ধ হয়। সেই লক্ষ্যে কাজ করা”
নেত্রকোণা জেলা সদরের মৌগাতি ইউনিয়নের মারাদিঘী গ্রামে ঢুপিখালী নদীর উপকূলে অবস্থিত এই স্কুলটি থেকে এ যাবত ৫৭টি ব্যাচ পরীক্ষা দিয়ে বেড়িয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রত্নামালা সরকার (শরীরে জড়ানো চাদর) বলেন, জাহেদ স্যার অনেক করেছেন। উনি শুধু সারাজীবন ইস্কুল ইস্কুল করেই গেছেন।
জাহেদ আলী স্কুল প্রতিষ্ঠা ছাড়াও শিক্ষার প্রসারে বিভিন্ন কাজ করেছেন। সব কিছু রেখে ২০২১সালের ৪ঠা এপ্রিল অসীমের পথে পাড়ি জমিয়েছেন।