আশিকুর রহমান,নেত্রকোনা প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোণার কলমাকান্দা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ওয়্যারিং ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে।
এ নিয়ে গত ১১ আগষ্ট কলমাকান্দা সদরের মিলন সরকার, বিষমপুরের দিলুয়ারসহ আরো নয় জনের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ কলমাকান্দা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বরাবরে জমা দিয়েছেন। শনিবার পর্যন্ত সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অভিযোগকারীরা।
তবে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী রাশেদুজ্জামানের দাবি, এ বিষয়টি হেড কোয়াটারে তদন্তাধীন রয়েছে। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওয়্যারিং ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম প্রতিটি ক্ষুদ্র শিল্প এবং সেঁচ লাইনের সংযোগ দেওয়ার জন্য প্রতিজনের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থ আদায় করছেন। আবাসিক সংযোগের জন্য তাকে দিতে হয় ৫০০ টাকা। এ ছাড়া ও তিনি বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তুলেছেন অনেক দালাল চক্র। তাদের মাধ্যমে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
এই অসৎ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জরুরী ব্যবস্থা নিতে গত ১১ আগষ্ট মিলন সরকার, দিলুয়ার, হাবিবুর রহমান, খাইরুল হক সহ গনস্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বরাবরে দাখিল করেছেন। কিন্তু অভিযোগের পাঁচ মাস অতিবাহিত হলেও এই অসৎ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিযোগকারীরা।
এ নিয়ে অভিযোগ কারীদের মধ্যে দিলুয়ার গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, ওয়্যারিং ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ নিয়ে গত পাঁচ মাস আগে তারা কলমাকান্দা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বরাবরে একটি অভিযোগ করেছেন। তার দাবী অভিযোগের পর তদন্ত কমিটি এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পরও এই অসৎ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিষয়টি খুবই আপত্তিজনক।
ওয়্যারিং ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম কার নিকট থেকে টাকা নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে দিলুয়ার বলেন, সেঁচ লাইনের জন্য কৈলাটী ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল্লাহ আল নোমানের কাছ থেকে ৭ হাজার, রাইচ মিলে বিদ্যুৎ লাইনের জন্য বিষমপুর গ্রামের আলী আকবরের নিকট থেকে ৫ হাজার, সাবমারসিবল পাম্বের বিদ্যুৎলাইনের জন্য ২ হাজার ৫শ টাকা সহ আরো অনেকের কাছ থেকেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে আব্দুল্লাহ আল নোমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে কথা হয় আলী আকবরের সাথে তিনি বলেন, বেশ কয়েকদিন অফিসে গিয়ে ওয়্যারিং ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি পাত্তা দেয়নি। পরে দিলুয়ারের মাধ্যমে তার সামনে সাইফুল ইসলামকে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। পরে সাইফুল ইসলাম তার কাজ করে দেন। টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম বলেন, দিলুয়ার একজন টাউট, তারা কয়েকজন আমাদের নাম করে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। এখন আবার তারা উল্টো আমার নামে অভিযোগ দিয়েছে।
কলমাকান্দা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী রাশেদুজ্জামান বলেন, সাইফুল ইসলামের অভিযোগটি বর্তমানে হেড কোয়াটার থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।