অপূর্ব কুমারঃ- রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি।
ঘন কুয়াশার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে গতকাল সোমবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। একইভাবে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটেও সোমবার রাত থেকে আজ বেলা পর্যন্ত প্রায় ১১ ঘণ্টা ফেরিসহ নৌযান চলেনি। দুর্ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষ এই দুই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে ষষ্ঠ দিনের মতো ভারী কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট রুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে নদী অববাহিকায় ঘন কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত বাড়ার সঙ্গে কুয়াশা বাড়লে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়। দুর্ঘটনা এড়াতে রাত সোয়া তিনটা থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি বন্ধ করা হয়। এর আগে উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া দুটি ফেরি মাঝ নদীতে আটকা পড়ে। আজ সকাল পৌনে সাতটার পর কুয়াশা কমলে ফেরি চালু হয়। এ সময় দৌলতদিয়ায় ছোট-বড় মিলিয়ে পাঁচটি, পাটুরিয়ায় চারটি এবং মাঝ নদীতে দুটি ফেরি আটকা পড়ে। মাঝ নদীতে থাকা ফেরি দুটিতে ২৫টির মতো যানবাহনে দুই শ’র মতো যাত্রী শীতে দুর্ভোগ পোহান। উভয় ঘাটে নদী পারাপারের অপেক্ষায় থাকা যানবাহনের যাত্রীরাও দুর্ভোগের শিকার হন।
এদিকে আরিচা নৌবন্দরের অধীন আরেক নৌরুট আরিচা-কাজিরহাট রুটেও গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে ভারী কুয়াশায় নৌযান চলাচল ব্যাহত হয়। রাত বাড়ার সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়। পরে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে রাত ১১টার পর থেকে এই রুটে ফেরিসহ সব নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ১১ ঘণ্টা পর আজ মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে ফেরি চলাচল শুরু হয়। দীর্ঘ ১১ ঘণ্টার মতো এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে আটকে থাকা পণ্যবাহী গাড়িসহ অন্যান্য গাড়ির চালক ও যাত্রীরাও দুর্ভোগে পড়েন।
আজ সকাল আটটার দিকে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, রাতে আটকে থাকা গাড়ি নিয়ে ফেরিগুলো ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। ভোরের বৃষ্টিতে প্রতিটি ঘাটের সামনে কাঁদা মাটিতে পিচ্ছিল হওয়ায় যানবাহন ফেরিতে ওঠানামায় সময় বেশি লাগছে।
দৌলতদিয়ার ফেরিঘাটের পন্টুনের লস্কর মনির হোসেন জানান, ‘গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে নদী অববাহিকায় ঘন কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত ৩টার পর ১০ ফুট দূরের কিছুই দেখা যাচ্ছিল না তখন দুর্ঘটনা এড়াতে সোয়া ৩টা থেকে ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় মাঝ নদী থেকে একাধিক ফেরির সাইরেন বাজানোর আওয়াজ পেলেও কোথায় ছিল বুঝতে পারিনি। ভোরে বৃষ্টি হওয়ায় কুয়াশা দ্রুত কমতে থাকে। তা না হলে আরও অনেক বেলা পর্যন্ত ফেরি বন্ধ থাকত।’
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ গাংচিল টিভিকে বলেন, কুয়াশার কারণে ষষ্ঠ দিনের মতো দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়েছে। এ জন্য দুই ঘাটে বেশ কিছু গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় আছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই পণ্যবাহী গাড়ি।