রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভা মিলনায়তনে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত সভায় অংশ নেন চারজন সংসদ সদস্য রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভা মিলনায়তনে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত সভায় অংশ নেন চারজন সংসদ সদস্য।

রাজবাড়ী জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্মিসভার নামে জনপ্রতিনিধিদের ডেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলার গোয়ালন্দ পৌরসভা মিলনায়তনে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত সভায় চারজন সংসদ সদস্য আচরণবিধি লঙ্ঘন করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী।

গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সীর সভাপতিত্বে ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. জিল্লুল হাকিম, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সালমা চৌধুরী রুমা ও খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন।

আগামী ১৭ অক্টোবর রাজবাড়ী জেলা পরিষদের নির্বাচন। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ (তালগাছ)। তাঁর সঙ্গে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দীপক কুণ্ডু (মোটরসাইকেল) ও ইমামুজ্জামান চৌধুরী (আনারস)।

গতকাল গোয়ালন্দে কর্মিসভা চলাকালে স্বতন্ত্র প্রার্থী দীপক কুণ্ডু জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, গোয়ালন্দে আওয়ামী লীগের কর্মিসভার নামে দলীয় নেতা-কর্মী ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সদস্যদের ডেকে সংসদ সদস্যরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভোট চাচ্ছেন। জেলা পরিষদ নির্বাচনের আচরণবিধির ২২ নম্বর ধারা অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না।

জানতে চাইলে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু কায়সার খান বলেন, গোয়ালন্দে কর্মিসভায় সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন বলে শুনেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী দীপক কুণ্ডুর মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী ও জিল্লুল হাকিমকে চিঠি দিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসরণ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

কর্মিসভায় সংসদ সদস্য মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘শফিকুল মোরশেদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রার্থী। প্রধানমন্ত্রীকে কথা দিয়েছি দলীয় প্রার্থী বিজয়ী করব। আমার পাংশা, বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলার সব ভোট পাবেন। এক-দুটি ভোট ভুলবশত এদিক-সেদিক হতে পারে। আশা করি গোয়ালন্দের সব ভোট তিনি পাবেন।’ জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফকীর আব্দুল জব্বারের সমালোচনা করে বলেন, ‘তাঁর নির্বাচনে আমরা শতভাগ সহযোগিতা করে বিজয়ী করেছিলাম। তিনি জেলা পরিষদের উন্নয়নে তেমন কোন কাজ করেননি।’

কর্মিসভায় উপস্থিত রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী, সংরক্ষতি দুই নারী সংসদ সদস্য সালমা চৌধুরী রুমা ও খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেনও দলীয় মনোনীত প্রার্থীর জন্য উপস্থিত সবার কাছে ভোট প্রার্থনা করেন।
এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য মো. জিল্লুল হাকিম মুঠোফোনে বলেন, ‘দলীয় কর্মিসভায় আমরা চার এমপি (সংসদ সদস্য) উপস্থিত ছিলাম। জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়া হয়নি।’ জেলা প্রশাসকের কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী দীপক কুণ্ডুর অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা আমাদের জানা নেই।’

রাজবাড়ী জেলা পরিষদ নির্বাচনে পাঁচটি উপজেলা, তিনটি পৌরসভা ও ৪২টি ইউনিয়নের ৫৯৮ জন জনপ্রতিনিধি ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, সাধারণ ওয়ার্ড সদস্য পদে ১৮ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।