1. admin@gangchiltv.com : admin :
রবিবার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০৬:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ঠাকুরগাঁওয়ে দলিত আদিবাসীদের অনূকুলে সংবাদ প্রকাশের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা নড়াইলের জঙ্গলগ্রামে দিনব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প- ২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গলাচিপায় দুস্থ অসহায় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ঢেউটিন ও চেক বিতরণ পটুয়াখালীতে কমলাপুরে চাদাবাজদের বিরুদ্ধে অটোরিক্সা শ্রমিকদের মানববন্ধন নড়াইলের পেড়লী যুবলীগ কর্মী আজাদ হত্যার বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ঠাকুরগাঁওয়ে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা সরকারের উন্নয়ন মূলক কাজ জনগনের মাঝে তুলে ধরার লক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে; সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান। যশোরে ডিশ বাবুর বিরুদ্ধে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দকে মারপিটের অভিযোগ নড়াইল কালিয়ায় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে হাজারো মানুষের ভীড়  দুই সাংবাদিকের মৃত্যুতে নড়াইলে স্মরণ ও শোক সভা অনুষ্ঠিত।

গোয়ালন্দে পদ্মার ইলিশ এখন সোনালি অতীত

  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০২২
  • ১০০ বার পঠিত

 

রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধিঃ- রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় পদ্মা নদীর পাড়ে বসে জাল মেরামতের কাজ করছেন জেলেরা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় পদ্মা নদীর পাড়ে বসে জাল মেরামতের কাজ করছেন জেলেরা
‘পদ্মা নদীর গভীরতা নেই, সেই স্রোতও নেই। এখন নদীতে পানি কম থাকায় ইলিশ ধরা পড়ে না। আগে প্রতি খেওয়ে চার থেকে পাঁচ মণ করে ইলিশ পেতাম। ইলিশের ভারে জাল তুলতে পারতাম না। অথচ এখন সারা দিনেও একটি ইলিশ পাওয়া যায় না।’ কথাগুলো বলেছিলেন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া এলাকার জেলে আসলাম মোল্লা (৬০)। ৩৫ বছর ধরে পদ্মা নদীতে মাছ ধরেন তিনি। নদীর বুকজুড়ে ইলিশের আনাগোনা কখন কেমন থাকে, কোন সময় কত ইলিশ ধরা পড়ত—এসব বিষয়ে তাঁর জানাশোনা তরুণ বয়স থেকেই।

বাহিরচর দৌলতদিয়ায় পদ্মার পাড়ে সারি সারি নৌকা বেঁধে রাখা হয়েছে। নদীর পাড়ে বসে জেলেদের কেউ ছেঁড়া জাল মেরামত করছেন, কেউ জাল টানার বাঁশের চোঙায় আলকাতরা মেখে রোদে শুকাচ্ছেন। সেখানেই আসলাম মোল্লার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘গোয়ালন্দের ঘাটে এসে, ইলিশ ধরা পড়ে শেষে’—বিখ্যাত এ পঙ্‌ক্তি এখন কেবলই অতীত। একসময় এ ঘাট এলাকায় বড় বড় ইলিশ ধরা পড়ত। তখন ট্রেনের বগি ভরে ইলিশ যেত কলকাতায়।

আসলাম মোল্লা বলেন, ‘তখনকার তেলকূপ হালদার, মদন হালদার ছিলেন এ অঞ্চলের নামকরা জেলে। তাঁদের সঙ্গে থেকে আমি মাছ ধরা শিখেছি। প্রায় ৩৫ বছর ধরে এ নদীতেই আছি। নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানির গভীরতা কমে গেছে; সঙ্গে ইলিশও কমেছে। ১৯৮৮ সালের বন্যার পর ইলিশ কমতে শুরু করে। ১৯৯৮ সালের বন্যার পর ইলিশ অনেকটা উধাও হয়ে গেছে। এখন তো দিনভর জাল ফেলেও ইলিশ পাওয়া যায় না।’

পদ্মা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানির গভীরতা কমে গেছে, সঙ্গে ইলিশও কমেছে। ১৯৮৮ সালের বন্যার পর ইলিশ কমতে শুরু করে। ১৯৯৮ সালের বন্যার পর ইলিশ অনেকটা উধাও হয়ে গেছে। এখন তো দিনভর জাল ফেলেও ইলিশ পাওয়া যায় না।
আসলাম মোল্লা, জেলে
গোয়ালন্দ এলাকার জেলেরা জানান, পদ্মা ও যমুনা নদীর মিলনস্থল গোয়ালন্দ হওয়ায় এখানে ইলিশসহ বড় বড় মাছের সমাগম থাকে। স্থানীয় ব্যক্তিরা ছাড়াও পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও মানিকগঞ্জের জেলেরা এখানে আসেন। গোয়ালন্দের ৩৫টি, মানিকগঞ্জের ১২টি, সিরাজগঞ্জ ও পাবনা অঞ্চল থেকে ১৬টির মতো বড় নৌকা এ এলাকায় মাছ ধরতে আসে। সারি ধরে প্রতিটি নৌকার জেলেরা ৩৫ মিনিট পর খেও দেওয়ার সুযোগ পান। দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় জাল ফেলে প্রায় ৩০ কিলোমিটার ভাটিতে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের কাছাকাছি জাল তোলেন তাঁরা। একটি নৌকা ৩০ থেকে ৩২ ঘণ্টা পর একবার খেও দেওয়ার সুযোগ পায়। ইলিশ না পাওয়ায় বর্তমানে জেলেরা কোনা, ফাশন জাল দিয়ে বড় মাছ শিকার করেন। এ ধরনের জাল তুলতে ১০ থেকে ১৫ জন লোক লাগে। একবার খেও দিতে গিয়ে ঘাটে ফেরা পর্যন্ত তাঁদের সাত থেকে আট হাজার টাকা খরচ হয়। বড় মাছ না পেলে প্রায়ই লোকসানে পড়তে হয় তাঁদের।

গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ অঞ্চলে নদীতে ইলিশ ধরেন—তালিকাভুক্ত এমন জেলের সংখ্যা ১ হাজার ৬২৭। এর মধ্যে মারা গেছেন অনেকে, পেশা পরিবর্তন করেছেন কেউ। তালিকাটি হালনাগাদের কাজ চলছে।

পদ্মা নদীতে প্রায় ৩৫ বছর ধরে মাছ ধরেন—এমন আরেক জেলে আক্কাছ আলী প্রামাণিক (৫০)। মাছ শিকারই ছিল তাঁর পেশা। তবে পরিস্থিতির কারণে সেটি বদলাতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। আক্কাছ আলী বলেন, ‘স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে মোটামুটি ভালোই কাটছিল। কিন্তু দিন দিন মাছের সংখ্যা কমতে থাকায় হতাশ হয়ে যাই। নদীতে আগে নৌকাভরে মাছ পেতাম। গোয়ালন্দ, আরিচা ঘাটে বিক্রি করে ঝুড়িভরে বাজার নিয়ে ফিরতাম। এখন সারা দিনে যে মাছ পাই, তা দিয়ে বাজারও হয় না। তাই চার থেকে পাঁচ মাস আগে মাছ ধরা বাদ দিয়ে ভ্যান নিয়ে ঘুরে মাছ বিক্রি করছি।’

গোয়ালন্দ এলাকার ইলিশ মাছের পাইকারি বিক্রেতা বাদল বিশ্বাস বলেন, তাঁর বাবা যখন এ ব্যবসা করতেন, তখন রমরমা অবস্থা ছিল। কুলিদের আওয়াজ আর বরফ ভাঙার শব্দে এলাকা মুখর থাকত। ওই সময় পদ্মার ইলিশ দেশের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি ট্রেনের বগিতে বোঝাই করে কলকাতা শহরে পাঠানো হতো। সেসব এখন সোনালি অতীত। তিনি আরও বলেন, প্রায় ৩০ বছর এ ব্যবসায় জড়িত। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ মণ ইলিশ উঠত। এখন পদ্মার ইলিশ একটিও পাওয়া যায় না। উপায় না পেয়ে এখন চট্টগ্রাম বা বরিশাল থেকে ইলিশ এনে ব্যবসা করতে হচ্ছে।

দৌলতদিয়া ঘাট মাছ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহন মণ্ডল বলেন, এ এলাকায় ইলিশ ধরার অর্ধশতাধিক নৌকা আছে। তিন থেকে চার বছর আগেও দৌলতদিয়া ঘাটের বাজারে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মণ করে ইলিশ আসত। এখন সারা দিনেও ১০ কেজি ইলিশ দেখা যায় না।

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর

আজকের দিন-তারিখ

  • রবিবার (সন্ধ্যা ৬:৫২)
  • ১লা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৬ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ ©  গাঙচিল টিভি
Theme Customized By Shakil IT Park