অপূর্ব কুমারঃ- রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি
রাজবাড়ীতে প্রচন্ড খড়ায় ক্ষেতেই শুকিয়ে মরে যাচ্ছে পাট। পানির অভাবে পাট পচাতে
না পেরে দুশ্চিন্তায় পড়েছে চাষীরা। খাল-বিলে পানি না থাকায় পড়েছেন কৃষকরা চরম দুর্ভোগে। বর্ষার ভরা মৌসুমেও খাল-বিলে পানি না থাকায় জলাশয়, ডোবা, পুকুরে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক খরচের চেয়ে বেশি হওয়াসহ পাটের গুনগত মান কমছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে, এ বছর চলতি মৌসুমে জেলার ৫টি উপজেলাতে ৪৯ হাজার ১২২ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজার হেক্টর জমিতে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে। রাজবাড়ীর পাটের চাহিদা রয়েছে সারা দেশে।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখাগেছে, পানি না থাকায় কৃষকরাই চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। সেখানে নদী, মাছ চাষের পুকুর, খাল, বিলে, কোথাও পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট জাগ দিতে পারছে না। কোনো উপায় না পেয়ে কৃষকরা পাট কেটে ক্ষেতেই ফেলে রাখছেন। অনেকে বন্যার পানির আশায় পাট না কেটে রেখে দিচ্ছেন।
আবার কেউ কেউ পর্যাপ্ত পানি না পেয়ে নিচু জায়গায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে জাগ দিচ্ছেন । তবে পাটের ফলন ভালো হলেও পর্যাপ্ত পানির অভাবে পাটের আঁশ আর সোনালি না থেকে কালো রঙের ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে। এটির বাজারমূল্য সোনালি আঁশের থেকে অনেক কম হবে বলে ধারণা কৃষকদের।
পরিমল নামে এক কৃষক বলেন, এ বছর বৃষ্টির পরিমাণ খুবই কম, আষাঢ় মাস শেষ হয়ে গেছে এখনো খালে বিলে কোথায়ও পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি নেই, বন্যার পানির আশায় আছি। খালে সামান্য বৃষ্টির পানি জমছে সেখানে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। কম পানিতে পাট জাগ দেওয়ায় পাটের আঁশ কালো হয় বলে তা কম দামে বিক্রি করতে হয়। পাটের ফলন এবার ভালো হলেও প্রয়োজনীয় পানির অভাবে আঁশ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। খালেদ বিন ওয়ালিদ নামের এক কৃষক বলেন, পাট চাষে কোন লাভ নেই। অনেক খরচ জমি প্রস্তুত করা, বীজ বোপন, সেচ, সার, আগাছা পরিষ্কার, পাট কর্তন, জাগ দেওয়া, পাট ধোয়া পর্যন্ত যে খরচ হয় হিসাব করলে কৃষকদের লোকসান হয়।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এসএম শহীদ নূর আকবর বলেন, খালে বিলে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় কৃষকরা পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন। পাট চাষে একটা উপকারিতা আছে, পাটের যে পাতা জমিতে পড়ে সে পাতা পচে জৈব সার তৈরী হয়। ফলে জমির উর্বরতা বেড়ে যায়। যে কোন ফসল করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। পাট কাটা দেরী হওয়ার কারণে বোরো আবাদ নিয়ে এখন বিড়ম্বনায় পড়ছেন।
তিনি আরো বলেন, জমি থেকে অনেক দূরে বহন করে নিয়ে পাট জাগে ফেলতে হচ্ছে বলে কৃষকদের পাট উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। পাটের ভালো দাম না পেলে লোকশান গুনতে হবে কৃষকদের।
Leave a Reply