অপূর্ব কুমারঃ- রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি
পদ্মা সেতু চালুর পর শিমুলিয়া–কাঁঠালবাড়ি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে
পদ্মা সেতু চালুর পর শিমুলিয়া–কাঁঠালবাড়ি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছেছবি: প্রথম আলো
পদ্মা সেতু চালুর পর ওই পথে চলাচলরত ফেরি ও লঞ্চের কী হবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের কাঁঠালবাড়ির মধ্যে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ রুটেও ফেরির সংখ্যা কমানো হবে।
তখন এ দুই রুট থেকে ফেরি অন্যান্য রুটে সরিয়ে নেওয়া হবে। বাংলাদেশে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) সূত্র বলছে, পদ্মা সেতু চালু হলেও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা পর্যন্ত শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি রুটের ফেরিগুলো চলাচল করবে।
ঈদের পরে ধীরে ধীরে এসব ফেরি অন্য রুটে সরিয়ে নেওয়া হবে। বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে এখন আটটি এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ২১টি ফেরি চলাচল করছে। এ দুই রুটে মোট ফেরি আছে ২৯টি। প্রতিবছর এই দুই রুটে চলাচলকারী ফেরি থেকে ৩৫০ কোটি টাকা আয় হয় বিআইডব্লিউটিসির। পদ্মা সেতু চালু হলে ফেরি থেকে আয় কমে যাবে। তাই আয় ঠিক রাখতে নতুন নতুন রুট চালু করা হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক এস এম আশিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা নতুন কয়েকটি রুট নিয়ে কাজ করেছি। পদ্মা নদী পারাপারে যেসব ফেরি চলাচল করছে, সেগুলো নতুন রুটে স্থানান্তর করব। তবে ঈদুল আজহা পর্যন্ত ফেরিগুলো থাকবে। কোনো কারণে যানজট দেখা দিলে ফেরি কাজে লাগানো হবে।’
নতুন ১৯টি নৌ রুটের প্রস্তাব
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ভবিষ্যতে চালুর জন্য ১৯টি নতুন ফেরি রুট চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে চালু রুটেও ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে। প্রস্তাবিত রুটের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে জামালপুরের বাহাদুরাবাদ থেকে গাইবান্ধার বালাসী ঘাট, মানিকগঞ্জের আরিচা থেকে পাবনার নরাদহ, পিরোজপুরের বেকুটিয়া থেকে চরখালী, কক্সবাজার থেকে মহেশখালী, বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থেকে হিজলা এবং আমতলী থেকে বরগুনা। তালিকায় আছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থেকে জামালপুর পর্যন্ত ফেরি রুটও।
চট্টগ্রাম থেকে সন্দ্বীপ পর্যন্ত ফেরি রুট চালুর চাপ আছে। নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে ভোলার মনপুরা হয়ে তজুমদ্দীন পর্যন্ত ফেরি দেওয়া নিয়েও আলোচনা চলছে।বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, নতুন ফেরি রুট চালুর ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার তালিকায় আছে যমুনা নদীর কুড়িগ্রামের রৌমারী থেকে চিলমারী নৌরুট। এ রুটে ফেরি চালু হলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জের যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হবে।
এ ছাড়া আরিচা-খয়েরচর রুটে ফেরি চালু হলে পাবনা ও ঈশ্বরদী থেকে যমুনা সেতু হয়ে ঢাকার দূরত্ব ৮০ থেকে ৯০ কিলোমিটার কমবে। বিআইডব্লিউটিসির আওতায় এখন ছয়টি রুটে ফেরি চলে। এগুলো হচ্ছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, আরিচা-কাজিরহাট, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি, চাঁদপুর-শরীয়তপুর, ভোলা-লক্ষ্মীপুর, লাহারহাট-ভেদুরিয়া। এর মধ্যে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি, শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরিতে গাড়ি পরিবহন সবচেয়ে বেশি।