অপূর্ব কুমারঃ- রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাট সড়কে
ফেরি পারাপারের অপেক্ষায় থাকা যানবাহনের দীর্ঘ সারি।
শুক্রবার সকাল থেকেই বরিশালে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। সকাল ১০টায় নগরের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে পৌঁছাতে পৌঁছাতে বৃষ্টির গতি বাড়ে। টার্মিনালে এসে ঢাকায় যাওয়ার বাসের টিকিট কাটতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। শরীয়তপুরের জাজিরায় ফেরিপথ বন্ধ থাকায় এই পথের সব বাস বন্ধ। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া–মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথ হয়ে অল্পসংখ্যক বাস চলছে। তবে টিকিট মিলছে না। কারণ, অনেক বাস পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভাড়া হয়ে গেছে। তাই যাত্রীরা হন্যে হয়ে বাস ধরার জন্য এ কাউন্টার ও কাউন্টার ঘুরছিলেন।
অনেক চেষ্টার পর সাড়ে ১১টার দিকে টিকিট পেয়ে লক্কড়ঝক্কড় মার্কা একটি বাসে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু হলো। দিনটা ইতিহাসের অংশ হতে যাচ্ছে। শনিবার পদ্মা সেতুর দ্বার খুলবে। তাই আজ থেকে শিমুলিয়া-জাজিরা নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মানে এ পথে ফেরি যুগের চির অবসান।
বাসে উঠে সিটে বসতে বসতে দেখা গেল, যাত্রীরা সবাই একে অপরের সঙ্গে আলাপে মত্ত। কান পেতে এই আলোচনার সারবস্তু পাওয়া গেল একটাই—পদ্মা সেতুর উদ্বোধন। একজন বলছিলেন, ‘একটি সেতু নিয়ে গুগলে আড়াই কোটি সংবাদ হয়েছে—ভাবা যায়!’ আবার একজন যাত্রীর আক্ষেপ, ‘যদি সুযোগ থাকত, দুই দিন পরেই ঢাকায় যেতাম। পদ্মা সেতু দিয়ে কত্ত আরামে যেতে পারতাম, আহা!’
আরেক যাত্রী মাসুদ পারভেজ বলছিলেন, গত মাসে তিনি বরিশালে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। ফেরার সময় নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে সন্ধ্যা সাতটায় সাকুরা পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। তাঁদের বাস জাজিরায় ফেরিঘাটে গিয়ে পৌঁছায় রাত ১২টায়। অথচ ফেরিতে উঠতে পারেন ভোর চারটায়। দীর্ঘ চার ঘণ্টা বাসের মধ্যে বসে থাকতে হয় স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে।