মুজাহিদুল ইসলামঃ
ঢাকা মিরপুর প্রতিনিধি।
গত ১৬/০৪/২০২২ শনিবার, ৩রা বৈশাখ ছিল ইমামুল আশেকীন শায়েখুল আকবার ডক্টর সৈয়দ এম. সাঈদুর রহমান আল-মাহবুবী (মাঃ আঃ) হুজুরের শ্রদ্ধেয় পিতা বিশিষ্ট সূফী সাধক হযরত সৈয়দ আবদুর রহমান সরকার (রহঃ)-এর ৩৭তম ওফাত দিবস। তাঁর পিতা ছিলেন- পীরানে পীর, দস্তগীর, সুলতানুল মাশায়েখ, সুলতানিয়া মোজাদ্দেদীয়া তরীকার ইমাম সৈয়দ আবুল ফজল সুলতান আহমদ চন্দ্রপুরী (রহঃ)-এর মহব্বতের জন ও একজন আশেক মুরীদ সন্তান।
হযরত সৈয়দ আবদুর রহমান সরকার (রহঃ) ১৯৬৯ সালে ইমাম শাহ চন্দ্রপুরী (রহঃ)-এর কাছে তরীকতের সবক গ্রহণ করেন। তিনি উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তা হওয়া সত্তেও তরীকতের সাধনা করা তাঁর জীবনের ব্রত ছিল। ফলে তিনি সব সময় তরীকতের সাধনায় গভীরভাবে আত্মনিয়োগ করে থাকতে পছন্দ করতেন। তাঁর জীবনে বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে। তিনি তাঁর সহধর্মীনী, ছেলে-মেয়ে, পরিবার-পরিজনকে তরীকতের সাধনায় উদ্ধুদ্ধ করতেন।
বিশিষ্ট সূফী সাধক হযরত সৈয়দ আবদুর রহমান সরকার (রহঃ) ছিলেন তাঁর পিতা-মাতার ছয় পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের মাঝে জ্যেষ্ঠ। ফলে তাঁর প্রচেষ্টায় তাঁর পিতা-মাতা, ছোট ভাই-বোন ও তাঁদের পরিবার-পরিজন তরীকতের শিক্ষা লাভের সুযোগ পায়।
১৯৮৬ সালের ১৭ এপ্রিল হযরত সৈয়দ আবদুর রহমান সরকার (রহঃ) ওফাত লাভের চল্লিশ দিন আগে তাঁর ছয় পুত্র ও চার কন্যার মাঝে জ্যেষ্ঠ সন্তান ডক্টর সৈয়দ এম. সাঈদুর রহমান আল-মাহবুবী (মাঃ আঃ) হুজুরকে মহান আল্লাহ তায়ালা ও দয়াল রাসূল (সঃ)-এর ধর্মের খেদমত করার জন্য উৎসর্গ করার ঘোষণা দেন।
সূফী সাধক হযরত সৈয়দ আবদুর রহমান সরকার (রহঃ)-এর ওফাতের সময় তাঁর সর্বশরীরে আল্লাহ্ আল্লাহ্ জ্বিকির জারি ছিল। তখন সূফী সাধকগণ বলেছিলেন, ‘‘তাঁর মত আধ্যাত্মিক উচ্চ মর্যাদা বাংলাদেশের কোন পীরেরও নেই।’’ তাঁর ওফাতের সাড়ে চার মাস পর প্রবল বৃষ্টিপাতে তাঁর রওজা শরীফের পূর্ব পার্শ্বের মাটি ধসে পড়লে তাঁর দেহ-মোবারক অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনা এলাকায় দারুন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। তখন পুলিশ-প্রশাসনসহ হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে রওজা শরীফে মাটি ফেলে উঁচু করে পুনরায় তাঁকে সম্মানের সাথে সমাহিত করা হয়। এই ঘটনার মাধ্যমে সেদিন আল্লাহ তায়ালা প্রমাণ করেছিলেন যে, তিনি সত্যিকারের অলী-আল্লাহ।
বিশিষ্ট সূফী সাধক হযরত সৈয়দ আবদুর রহমান সরকার (রহঃ)-এর ওফাত দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার মিরপুর জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম সংলগ্ন তাঁরই বাড়ীতে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আশেকে রাসূল সংস্থার সদর দপ্তরে সেদিন বিশেষ মিলাদ ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। তাঁর গুণমুগ্ধ পাড়া-প্রতিবেশী ও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বিপুল সংখ্যক আশেকে রাসূল ও ধর্মপ্রাণ মুসলমান এই মাহফিলে যোগদান করেন। ফলে সংস্থার সাত তলা ভবন লোকে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।
ইমামুল আশেকীন শায়েখুল আকবার ডক্টর সৈয়দ এম. সাঈদুর রহমান আল-মাহবুবী (মাঃ আঃ) হুজুর সমাগত অতিথিদের সাদর সম্ভাষণ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বাণী মোবারক প্রদানকালে তাঁর পিতার আধ্যাত্মিক সাধনা সম্পর্কে আলোকপাত করেন এবং আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন। অতঃপর সম্মানীত অতিথিগণ ইফতার সম্পন্ন করেন এবং মাগরিবের নামায আদায় করে পরিতৃপ্তির সাথে বিদায় নেন। মাহফিলে অতিথিদের অভ্যর্থনার দায়িত্বে ছিলেন- আন্তর্জাতিক আশেকে রাসূল সংস্থার মহাসচিব বৃটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির রিসার্চ ফেলো প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ এ. এফ. এম. বরকত-এ-খোদা (মাঃ আঃ) ও যুগ্ম মহাসচিব বৃটেনের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের স্কলার সৈয়দ এ. এফ. এম. রহমত-এ-খোদা (মাঃ আঃ)। অতিথি আপ্যায়নের দায়িত্বে ছিলেন- হযরত সৈয়দ আবদুর রহমান সরকার (রহঃ)-এর মেজো পুত্র জনাব মোঃ ওবায়দুর রহমান ও তার সহকর্মীগণ। আপ্যায়নের সহযোগিতায় ছিলেন- আন্তর্জাতিক আশেকে রাসূল সংস্থার সম্মানীত স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ।
Leave a Reply