আবদুর রহিম কক্সবাজার ::
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দালালের খপ্পড়ে পড়ে সাগর পথে চোরাইভাবে মালয়েশিয়া গমনের প্রস্তুতিকালে উখিয়া উপকূল থেকে ট্রলারসহ মানবপাচারকারী চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১৫। ট্রলার থেকে ৫৭ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু এবং ম্থানীয় ১জন স্থানীয় নাগরিক উদ্ধার।
সুত্র জানায়, ২৫ মার্চ ভোররাত সাড়ে ৩টারদিকে উখিয়া জালিয়াপালং ইউপিস্থ ছোটখালী গ্রামের পার্শ্বে ঝাউবাগান সংলগ্ন সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা দিয়ে ট্রলারের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবৈধভাবে মালয়েশিয়া পাচারের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর একটি চৌকষ আভিযানিক দল গভীর সমুদ্র এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেএকটি মাছ ধরার ট্রলার আটক করে তল্লাশী অভিযান শুরু করে। তল্লাশীর এক পর্যায়ে ট্রলারের ডেকের নিচে বিশেষ কায়দায় জিম্মি করে রাখা অবস্থা হতে ৩৫জন রোহিঙ্গা নারী-শিশু ও ২৩ জন পুরুষ এবং স্থানীয় ১জন ভিকটিমকে উদ্ধার করে। এই মানবপাচারের সাথে সম্পৃক্ত কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলার মহিচাইল ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের বাগমারা গ্রামের বাসিন্দা বর্তমানে কক্সবাজার পাহাড়তলীর হাফেজ সওদাগরের ভাড়াটিয়া মোঃ আবুল কাশেমের পুত্র মোঃ সোহেল (৩২) এবং কুতুবদিয়া উপজেলার নিমসাখালী ছামিয়া পাড়ার বাসিন্দা বর্তমানে কক্সবাজার কলেজ রোডের জানারঘোনায় বসবাসরত মৃত সিরাজুল হকের পুত্র মুছা কলিমুল্লাহ (৪২) কে গ্রেফতার করা হয়।
উদ্ধারকৃত ভিকটিমরা জানায়, স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের উচ্চ বেতনে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত করানোর নিমিত্তে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে তাদের রাজি করিয়ে ৫০-৫৫ হাজার টাকার বিনিময়ে চুক্তি করে। প্রাথমিক অবস্থায় তারা ভিকটিমদের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে গ্রহণ করে এবং বাকী টাকা মায়ানমার-টেকনাফ সীমান্তে অবস্থানরত জাহাজে ওঠার সময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পরিশোধ করবে মর্মে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ভিকটিমরা মানব পাচারকারীদের প্ররোচনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প হতে মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে। স্থানীয় দালালরা ৪-৫ জন করে টেকনাফে হাফিজপাড়া পাহাড়ী এলাকায় ৫০-৬০ জনকে একসাথে জড়ো করে। অতঃপর তারা মাছ ধরা ট্রলারের মাধ্যমে ভিকটিমদের টেকনাফ-মায়ানমার সীমান্তে অবস্থানরত জাহাজে স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে রওনা করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়া পাচারের প্রলোভন দেখায়। এরপর ভিকটিমদের কাছ থেকে চুক্তি অনুযায়ী টাকা গ্রহণ করে মালয়েশিয়া পাঠানোর নাম করে টেকনাফ-মায়ানমার সীমান্তে জাহাজে অবস্থানরত দালালদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেয়। বিকাল ৩টায় কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হয়।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক ( ল এন্ড মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ বিল্লাল উদ্দিন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply